1. admin@timesofpabna.com : admin :
  2. ceo@kalersangram.com : kalersangram W : kalersangram W
মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:২৩ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
শিরোনাম:

কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করা কাগজেই সিমাবদ্ধ থাকছে

  • প্রকাশিত : রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৪২ বার পড়া হয়েছে

 

টাইমস ডেক্স:পাবনা জেলার সর্বস্তরেই  সুর্য্যদয়ের পুর্বেই আনা গোনা শুরু হয় কোমলমতি শিশুদের প্রাইভেট শিক্ষকের বন্দী কক্ষে। পাবনা জেলা সদর সহ প্রতিটি উপজেলায় নামে বে-নামে গড়ে উঠেছে কোচিং সেন্টার অথবা প্রাইভেট সেন্টার।

শুধু জেলা সদর নয়  পাবনা জেলার ৯টি উপজেলায় পরিণত হয়েছে কোচিং বা প্রাইভেট বাণিজ্যে উপকরণে ।শুধু জেলা সদরে শতাধিক শিক্ষক খুলে বসেছেন প্রাইভেট বাণিজ্যে সেন্টার।

পাঁচটি মৌলিক চাহিদার মধ্যে অন্যতম  চাহিদা হল শিক্ষা। আর এই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করা। কিন্তু বর্তমানে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় কোচিং-বাণিজ্য মহামারি আকার ধারণ করায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের নিজস্ব সৃজনশীলতা। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় নম্বর কম দিয়ে, মানসিক নির্যাতন করে, বিভিন্ন কলাকৌশল অবলম্বন করে এক শ্রেণির শিক্ষকেরা তাঁদের কাছে পড়তে বাধ্য করছেন। তাদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকেরা।

বছরের প্রথম মাস থেকেই শুরু হয় এসব প্রাইভেট বা কোচিং। অনেক অতি উৎসাহী অভিভাবক আবার তাঁদের সন্তানকে সকালে এক কোচিং এবং বিকেলে আরেক কোচিংয়ে পাঠান। অনেক অভিভাবক কোচিং ও প্রাইভেট দুটিই চালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রাইভেট না পড়লে বিদ্যালয়ে গিয়েও পাচ্ছেন না শিক্ষকের সুদৃষ্টি। আর বেশির ভাগ প্রাইভেট-কোচিং সেন্টারে ক্লাস কার্যক্রম শুরু হয় সকাল ৬টা থেকে ৯টা অবধি অথবা সন্ধ্যায়। সারা দিন ক্লান্তির পরে কোমলমতি শিশুদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিয়ে যাওয়া হয় প্রাইভেট-কোচিং সেন্টারে। ব্যাগভর্তি বই-খাতা নিয়ে এসব শিশু সারাক্ষণ শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতায় ভোগে। অনেক শিক্ষার্থীই এ চাপ সহ্য করতে না পেরে আক্রান্ত হচ্ছে নানা ধরনের মানসিক সমস্যায়।

সম্প্রতি একাধিক জরিপ থেকে জানা যায়, প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়ে। বিশেষ করে জেলা বা উপেজলার কোনো শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়ে না তা খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন।

উচ্চ মাধ্যমিক স্তরেও শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ার হার বাড়ছে। এ ব্যাপারে অভিভাবকদের উদ্বেগ খুব বেশি কাজ করে। কারণ এইচএসসিতে ভালো ফল করতে না পারলে শিক্ষার্থীরা মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো জায়গায় প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না।

গত শতকের নব্বইয়ের দশকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে বিশেষ প্রয়োজনে প্রাইভেট-কোচিং প্রচলিত হয়েছিল। সময়ের পরিবর্তনে নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে সৃজনশীল পদ্ধতি চালু হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে প্রাইভেট বা কোচিংয়ের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে এমনটি মনে করেছিলেন শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। কিন্তু ফল হয়েছে উল্টো।

২০১২ সালের ২০ জুন কোচিং বাণিজ্য বন্ধে নির্দেশনা জারি এবং হাইকোর্টের আদেশে ২০১৯ সালে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা নিশ্চয়ই সরকারের প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এই নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে কোচিং করাতে পারবেন না। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতি নিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ১০ জন শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে ছাত্রছাত্রীর তালিকা, রোল, নাম ও শ্রেণি উল্লেখ্য করে জানাতে হবে।কোনো শিক্ষক বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে ওঠা কোনো কোচিং সেন্টারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত হতে পারবেন না বা নিজে কোনো কোচিং সেন্টারের মালিক হতে পারবেন না। তবে অভিভাবকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করতে পারবেন। এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তার এমপিও স্থগিত, বাতিল, বেতনভাতা স্থগিত, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, বেতন একধাপ অবনমিতকরণ, সাময়িক বরখাস্ত,চূড়ান্ত বরখাস্ত ইত্যাদি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

দেশ সংস্কারের হয়েছে পাশাপাশি শিক্ষার সংস্কার আনতে প্রতিষ্ঠানপ্রধান, শিক্ষকসমাজ এবং তদারকি দলকে সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সর্বোপরি সরকারি উদ্যোগে কোচিং বাণিজ্য কঠোর হস্তে দমন করে শিক্ষকদের মানসিকতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিবোধের উন্নয়ন ঘটাতে না পারলে দুর্নীতির ঘূর্ণাবর্তে হারিয়ে যাবে আমাদের এই শিক্ষা ব্যবস্থা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
Theme Designed By FriliX Group