1. admin@timesofpabna.com : admin :
  2. ceo@kalersangram.com : kalersangram W : kalersangram W
রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:১২ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
শিরোনাম:

  • প্রকাশিত : রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

ডেঙ্গুর উৎপত্তিস্থল আর গুপ্ত রাজনীতি: একটি ভয়ানক সাদৃশ্য একজন সচেতন নাগরিকের কলমে।

বিশেষ প্রতিনিধি

ঢাকার নাগরিক জীবনে বর্ষা মানেই আতঙ্ক-ডেঙ্গু।
ছোট একটি মশা, কিন্তু তার কামড়ে অসংখ্য প্রাণ ঝরে যায় প্রতিবছর। এডিস মশা জন্মায় কোথায়? জমে থাকা পানি—ফুলের টব, ভাঙা কাপ-পিরিচ, পুরনো টায়ার কিংবা ডাস্টবিনের পেছনে ছোট কোনো গর্ত-এই সব পরিত্যক্ত, অবহেলিত জায়গাগুলোই তাদের নিরাপদ আস্তানা।

পরিচ্ছন্নতা, সচেতনতা আর সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা ছাড়া এই মশার উৎপত্তি ঠেকানো যায় না।

অদ্ভুতভাবে, আমাদের সমাজের কিছু রাজনৈতিক বাস্তবতাও যেন এই মশার জীববিজ্ঞানকে হুবহু প্রতিফলিত করে।

বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাবলি সেই চিত্রকে আরও স্পষ্ট করে তোলে।

ঢাবিকে বলা হয় মুক্ত চিন্তার তীর্থস্থান, প্রগতিশীলতার প্রতীক। অনেকেরই অটল বিশ্বাস ছিল-এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনোই শিবিরের মতো গোষ্ঠীর প্রকাশ্য রাজনীতি করার সুযোগ হবে না। কারণ, এখানে যে রাজনীতি চলে, তার ভিত্তি ইতিহাস, সংগ্রাম ও প্রগতিশীল চিন্তার উপর গড়ে ওঠা। জাকসুতেও সেই একই নীতি বহাল ছিল বছরের পর বছর।

কিন্তু বাস্তবতা আমাদের এক নতুন পাঠ পড়াচ্ছে।

যেখানে প্রকাশ্য রাজনীতি নিষিদ্ধ, সেখানেই গুপ্ত রাজনীতি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
এ যেন জমে থাকা পানিতে জন্ম নেওয়া ডেঙ্গুর এডিস মশা।
ঢাবি ও জাবিতে প্রকাশ্যে কোনো কমিটি নেই, নেই ব্যানার, নেই কোনো কর্মসূচি-কিন্তু শিকড় ছড়িয়ে আছে গভীরে।
৫ আগস্টের আগে কখনোই শিবিরের কোনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেখা যায়নি, তাদের অস্তিত্ব ছিল নিরব, ছায়ার মতো।
একজন কর্মীকে চেনা গেলেও, সে পরিচিত নয় কোনো সাংগঠনিক পদবী দিয়ে।
সভাপতি ও সম্পাদক-এই দু’টি পরিচয় ছাড়া কিছুই নেই প্রকাশ্যে।

ঠিক যেমন এডিস মশা কখন কামড় দেবে, তা টের পাওয়া যায় না, তেমনি এই গুপ্ত সংগঠনগুলো কখন ছোবল দেবে—তারও কোনো পূর্বাভাস থাকে না।

আর এই সুযোগ তারা পায় তখনই, যখন আমরা নিঃশব্দ থাকি, নিষ্ক্রিয় থাকি।

ডেঙ্গুর উৎপত্তিস্থল যেমন আমরা নিজেরাই তৈরি করি অবহেলায়, তেমনি গুপ্ত রাজনীতির উৎপত্তিও ঘটে আমাদের উদাসীনতায়।

আমরা ভাবি, নিষিদ্ধ করলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে নিষিদ্ধ করলেই যে কোনো চিন্তা নিঃশেষ হয়ে যায় না।
বরং যখন কোনো মতাদর্শের চর্চা নিষিদ্ধ হয়, তখন সেটি মাটির নিচে গেঁথে যায়, গোপনে বিস্তার করে—ঠিক যেমন ডেঙ্গুর লার্ভা জমে থাকা পানিতে চুপচাপ বড় হতে থাকে।সমাধান কী?

পরিষ্কার পানি ফেলে দিলেই ডেঙ্গু রোধ হয় না।
নিয়মিত পরিচর্যা, সচেতনতা আর সম্মিলিত উদ্যোগই পারে এই মরণঘাতী রোগের বিস্তার ঠেকাতে।

রাজনীতিতেও তাই-নিষিদ্ধ করার বদলে চাই স্বচ্ছতা, চাই গণতান্ত্রিক পরিবেশ, চাই বিতর্কের সুযোগ।
চাই এমন এক সমাজ, যেখানে কোনো চিন্তাকে আড়ালে থাকতে না হয়, বরং যেখানে আলোচনার মাধ্যমে সব মতের মুখোমুখি হতে পারে প্রতিযোগিতার ময়দানে।

কারণ, আলো-হাওয়া থেকে বঞ্চিত চিন্তাই সবচেয়ে ভয়ংকর হয়ে ওঠে।

আমাদের সমাজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং রাজনীতি-সব ক্ষেত্রেই দরকার নিয়মিত ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা’। নয়তো ডেঙ্গুর মতোই ছড়িয়ে পড়বে অন্ধকারের ভাইরাস।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
Theme Designed By FriliX Group