রাজিবপুর-রৌমারী (কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি
“কিনোয়া কী এটাই জানতাম না। কেনোয়া নাম শুনে চমকে গিয়েছিলাম। এখন এই ফসল চাষ করেই আমি একজন সফল ।” এভাবেই নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন কুড়িগ্রামের মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষক সানোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, “কিনোয়া দেখতে কেমন, এটা দিয়ে কী করা যায়-এমন কিছুই জানতাম না। লজিক প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথম জানতে পারি এই ফসল সম্পর্কে। জানার পর আগ্রহ বাড়ে। পরামর্শ নিয়ে আমরা তিনজন মিলে ৩০ শতাংশ জমিতে চাষ করি। প্রথমবারেই সফল হই। এখন আমরা আশাবাদী-চাষিদের স্বপ্নপূরণে কিনোয়া ও চিয়া শীড বড় ভূমিকা রাখবে।”
এ কথা বলেন, কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা সানোয়ার হোসেন। তিনি চিয়া শীড ও কিনোয়া উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা এবং বাজার সংযোজন বিষয়ক একটি কর্মশালায় অংশ নিয়ে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
বুধবার (২১ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজিবপুর উপজেলা হলরুমে দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করে ‘আমাল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’ ও ‘লজিক প্রকল্প’। কর্মশালায় চিয়া শীড ও কিনোয়া উৎপাদনের গুরুত্ব ও সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
প্রথমে কৃষকরা এই দুই নতুন ফসল সম্পর্কে তেমন কিছু জানতেন না। তবে কর্মশালায় অংশ নিয়ে তারা এ সম্পর্কে ধারণা পান এবং চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেন। মোহনগঞ্জ ও কোদালকাটি ইউনিয়ন থেকে আগত কয়েকজন কৃষক জানান, প্রথমবারের মতো চিয়া শীড ও কিনোয়া চাষ করেছেন তারা। এ দুটি ফসলের চাহিদা অনেক, উৎপাদন খরচ কম এবং বাজারমূল্য তুলনামূলকভাবে বেশি। চাষ করাও সহজ।
আমাল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র বলেন, চিয়া শীড ও কিনোয়া উভয়ই সুপারফুড হিসেবে পরিচিত। চিয়া শীডে রয়েছে উচ্চমাত্রার ফাইবার, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ ও ওজন কমাতে সহায়তা করে।
অন্যদিকে, কিনোয়াতে রয়েছে উচ্চমাত্রার প্রোটিন, এটি গ্লুটেন-ফ্রি, পাশাপাশি এতে রয়েছে ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ এবং লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স। এই উপাদানগুলো মানবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন মো. মুছা, জেলা ক্লাইমেট চেঞ্জ কো-অর্ডিনেটর (ডিসিসিসি), লজিক প্রকল্প, কুড়িগ্রাম; মো. আনোয়ার হোসেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা; চিরঞ্জিত দাস, রিসোর্স মবিলাইজেশন অফিসার, আমাল ফাউন্ডেশন; মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, অ্যাসিস্ট্যান্ট একাউন্টস অফিসার; বিশাল চন্দ্র রায়, ডিস্ট্রিক্ট সুপারভাইজার, আমাল ফাউন্ডেশন এবং মো. শাহীন আলম, উপজেলা ফ্যাসিলিটেটর, লজিক প্রকল্প, রাজিবপুর।
Leave a Reply