নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পাবনার নগরবাড়ি ঘাটে নদীচ্যানেল ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে উত্তোলিত বালু নির্ধারিত টেন্ডারের মাধ্যমে শুকনো জমিতে রেখে বিক্রির নিয়ম থাকলেও বাস্তবে তা মানা হচ্ছে না—এমন অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, নলকোলা বাজারের পাশে রঘুনাথপুর মৌজায় ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে তোলা বালু সরিয়ে নেওয়ার সময় ভেকু দিয়ে প্রায় ১০-১২ ফুট গভীর করে মাটি কেটে জমিতে বড় গর্ত তৈরি করা হয়েছে। এতে আশপাশের জনপদে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ঝুঁকি।
প্রভাব পড়ছে বাজার ও ঘরবাড়ি ধ্বসের আশঙ্কায়। ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি কেটে ফেলা হচ্ছে। রাস্তার পাশে ধুলাবালির ঝড় সৃষ্টি হচ্ছে। বন্দর এলাকার কয়লা রাখার জায়গা বিনষ্ট হয়ে গেছে এবং আশেপাশের ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে আবু শাহীন মোল্লা জানান, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজন জোর করে আমার জমি কেটে নিয়েছে। এতে আমার চাষের ক্ষতি হচ্ছে। কোনো অনুমতি নেয়নি, কোনো ক্ষতিপূরণও দেয়নি।
মজনু শেখ বলেন, আমার জমিও কেটে গর্ত করে নিচ্ছে তারা। সরাসরি ব্যবসা ও কৃষিকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এখনও ক্ষতিপূরণ পাইনি।
জমির মালিক দাবি করে শাহীন শেখ বলেন, জমির মালিক আমি। কিন্তু কেউ না জানিয়ে জায়গা কেটে ফেলেছে। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ।
বিআইডব্লিউটিএ-র কর্মকর্তা মো. ওয়াকিল মুঠোফোনে জানান, এটি আমাদের দায়িত্ব নয়। এই ড্রেজিং বালু বিক্রির টেন্ডার বিষয়ক কমিটির সভাপতি হচ্ছেন ডিসি সাহেব (জেলা প্রশাসক)। বিষয়টি তিনিই বলতে পারবেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নদীপাড় কাটা হলে পাশের জমির ভারসাম্য নষ্ট হয়, ফলে ধসে পড়ে জমি ও স্থাপনা। পানি প্রবাহের পথ পরিবর্তিত হয়ে নতুন ভাঙন সৃষ্টি হয়। বন্যার সময় দ্রুত পানির প্রবেশ ঘটে, বাড়ে প্রাণ ও সম্পদের ঝুঁকি। নদী বন্দর ও ব্যবসা স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বিনষ্ট হয় সার্বিক অবকাঠামো।
এলাকাবাসী দ্রুত মাটি কাটা বন্ধ করা, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা, টেন্ডারের নিয়ম অনুযায়ী শুধুমাত্র শুকনো অংশের বালু তোলার নিশ্চয়তা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর তদারকির দাবি জানিয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন বালু/ মাটি কাটার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান তো আপনারা জানেন। আমরা যখনই খবর পাই তখনই সেখানে ছুটে যাই। সরকারি ভাবে বালু কাটা কমিটির সদস্য সচিব বি আই ডাব্লিউ টি এ এর নির্বাহী প্রকৌশলী। আমি তাকে বলে দেবো প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেবে।
Leave a Reply