বিশেষ প্রতিবেদক:ছাত্র-জনতার রোষানলে দেশ থেকে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার প্রেতাত্মারা এখনও রয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) গাইবান্ধা স্টেডিয়ামে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, গত ১৬ বছর হাসিনা ও তার দোসররা দেশ লুটপাট করে খেয়েছে। মানুষের ওপর অন্যায়ভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছ। পুরো দেশকে একটি কারাগার বানিয়েছিলেন। মানুষের দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। মানুষ সহ্য করতে না পেরে রাস্তায় নেমেছিলেন।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতর রোষানলে দেশ থেকে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। কিন্তু তার প্রেতাত্মারা এখনও রয়ে গেছেন। তারা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে বারবার নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে সবাইকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বাজারব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে না। ষড়যন্ত্রকারীদের দমিয়ে রাখাও সম্ভব হবে না।

বিএনপির এ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর আস্থা রয়েছে। তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করে দেশকে গণতন্ত্রমুখী করবে ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে। শুধু সংস্কার নয়, ভোটের অধিকারও প্রতিষ্ঠা করবে। এজন্য যৌক্তিক সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দেশের সব সংকট কেটে যাবে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা কী ছিল সেটা সবাই জানেন। আকাঙ্ক্ষা ছিল মানুষ যেন ভোট দিতে পারবে, স্বাচ্ছন্দ্যে বাজার করতে পারবে, চলাফেরা করতে পারবে, দেশে খুন ও গুম হবে না, দেশের বাজার নিয়ন্ত্রণ হবে, ব্যাংক লুট, ঘুষ এবং দুর্নীতি বন্ধ হবে। কিন্তু এগুলো এখন দুঃখজনক পর্যায়ে আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যারা ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করেছে, তারা এখনো বহাল তবিয়তে আছে।

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে দুদু বলেন, আপনি সম্মানিত মানুষ। এমন কোনো কাজ করবেন না, যাতে আপনার ওপর দেশের মানুষের মনে সন্দেহ সৃষ্টি হয় ও সম্মান নষ্ট হয়। আপনার ওপর এখনও বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা আছে। সেই আস্থা নষ্ট করবেন না। আপনাকে কেউ না কেউ ব্যবহার ও কলঙ্কিত করতে চাচ্ছে। এই জায়গায় সতর্ক থাকতে হবে।

গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মইনুল হাসান সাদিকের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুন্নবী টুটুলের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির গ্রাম সরকার বিষয়ক সম্পাদক আনিসুজ্জামান খান বাবু, রংপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক ও অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সহসভাপতি শহীদুজ্জামান শহীদসহ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা।